ছিনতাইকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ছুরিকাঘাতে আহত ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খন্দকার আবু তালহা হাসপাতালে মারা গেছে। ভোরের রাস্তায় এক শিক্ষিকা ছিনতাইকারীদের কবলে পড়লে তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় এই সাহসী তরুণ। তাকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। কেউ এগিয়ে আসেনি তালহাকে সাহায্য করতে। আহত তালহা নিজেই ফিরে গিয়েছিল তার বাসার গেটে। অভিভাবকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। একটি পরিবারের স্বপ্ন-সাধ মিশে গেল মাটিতে। পুলিশ জানিয়েছে, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে গত এক মাসে ওই এলাকা থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন এরইমধ্যে জামিনে বেরিয়ে এসে আবার ছিনতাই করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আদালতে পাঠানোর পর পুলিশ কি তাদের প্রতিবেদনে এমন কোনো ফাঁকফোকর রেখে দিয়েছিল, যাতে আদালত থেকে জামিন পেতে কোনো অসুবিধা না হয়? এক মাসে একই জায়গা থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা বলে দিচ্ছে ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে।
স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হবেÑএটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে মানুষের মধ্যেও প্রতিরোধ করার মানসিকতা গড়ে উঠছে না। এ ঘটনা থেকে তা স্পষ্ট হয়েছে। মানুষ যে নিস্পৃহ থাকছে, এটাও কি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারণে? আবার ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে দেওয়ার পরও অপরাধীদের জামিনে বেরিয়ে আসার ঘটনায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দেওয়াটাও স্বাভাবিক।
রাজধানী ঢাকায় ছিনতাইয়ের স্পটগুলো অনেক আগে থেকেই চিহ্নিত। তালহাকে যেখানে কোপানো হয়েছে, এই জায়গা থেকে গত এক মাসে যদি ২২ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে, তাহলে তো এখানে পুলিশের সার্বক্ষণিক টহলদল থাকার কথা। সেখানে পুলিশের নিয়মিত টহল ছিল কি নাÑএ প্রশ্নও এখন বড় হয়ে দেখা দেবে। দায়িত্ব পালনে পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে সব সময় প্রশ্ন ওঠে। এ ক্ষেত্রেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা উচিত বলে আমরা মনে করি। প্রতিদিন রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটবে, তালহার মতো সাহসী তরুণদের জীবন দিতে হবে, পুলিশ কি শুধু একটি হত্যা মামলা নিয়েই সব দায়িত্ব পালন শেষ বলে মনে করবে? ছিনতাইয়ের স্পট যদি চিহ্নিত হয়ে থাকে তাহলে সেই স্পটে ছিনতাই বন্ধ করা যাবে না কেন? এটা কি পুলিশের ব্যর্থতা, নাকি যথাযথ দায়িত্ব পালনে অবহেলা?